কসবার বায়েকে অবৈধভাবে আসছে ভারতীয় চিনি কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ চিনি পাচারে জড়িত

 কসবার বায়েকে অবৈধভাবে আসছে ভারতীয় চিনি কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ চিনি পাচারে জড়িত

নিউজ আপডেট ডেস্ক:১৩জুলাই ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পথে আসছে চিনি। দেশের বাজারের তুলনায় দাম কমে পাওয়ায় চিনির কারবার বেড়েই চলেছে। উপজেলাসহ জেলার অধিকাংশ বাজারে ওই চিনিতে সয়লাব হয়ে গেছে। অবৈধভাবে আসায় সরকার হারাচ্ছে বড় অঙ্কের রাজস্ব। দেশের চিনি শিল্পের ক্ষেত্রে ঘটছে ব্যাপক ক্ষতি। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ১২/০৭/২৪ তারিখ রাত ১২ঃ০০ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি), কসবা'র নেতৃত্বে কসবা থানা পুলিশ ও বিজিবি সহযোগে যৌথ টাস্কফোর্স অভিযানে জনৈক হানিফ চৌধুরীর বাড়ি থেকে ১৭৩ বস্তা চিনি জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে কসবা থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।


 স্থানীয়রা বলছে, উপজেলার গোপীনাথপুর বায়েক ইউনিয়নের সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আনা হচ্ছে ভারতীয় চিনি। বায়েক ইউনিয়নের গৌরাঙ্গলা, পুটিয়া, খাদলা, মাদলা, শ্যামপুর, কুল্লাপাথর এবং গোপীনাথপুর সীমান্তের ধজনগর, মতিনগর, কাজিয়াতলা, বাগানবাড়ি, পাথারিয়াদ্বার লতুয়ামুড়া এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চিনি দেশে প্রবেশ করে। একশ্রেণির চোরাকারবারি সীমান্ত এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষদের চিনি চোরাচালানের কাজে ব্যবহার করছেন। কাঁটাতারের বেড়া পার করে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল ইজিবাইকের পাশাপাশি, রাতে পিকআপ ভ্যানে করে এসব চিনি ছড়িয়ে যায় জেলার বিভিন্ন বাজারে।  এই বিষয়ে বেশ কয়েকবার নিউজ আপডেট নিউজ প্রকাশ হয়েছিল।

 নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী নিউজ আপডেটকে বলেন, ‘বায়েক ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকার শতাধিক মানুষ চিনি চোরাচালান পাচারে জড়িত। প্রতিদিন প্রায় ৩০-৪০ টন ভারতীয় চিনি অবৈধভাবে দেশে আসছে। দেশের বাজারের তুলনায় ভারতে চিনির দাম কম হওয়ায় চোরাকারবারিরা সুযোগ নিচ্ছে।

স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, ভারতের বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি ৪৪ রুপি। ৫০ কেজির বস্তার দাম হাজার ২০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। একই পরিমাণ চিনি কসবা উপজেলার কুটি বাজারে পাইকারি বিক্রেতারা হাজার ৬০০ থেকে হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা মুদি দোকানিদের কাছে। উপজেলার গ্রামের হাটবাজারগুলোতে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা দরে। তবে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এতে একশ্রেণির মানুষ লাভবান হলেও দেশীয় চিনি শিল্প হুমকির মুখে পড়ছে। সেই সঙ্গে দ্রুত এই চোরাচালান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।


আলী মিয়া বলেন, ‘বাজারে চিনি আনতে গেলে ভারতীয় চিনি ছাড়া দেশীয় বা আমদানিকৃত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দোকানে বস্তা পরিবর্তন করে অন্য বস্তায় রেখে বিক্রি করছে। নিরুপায় হয়ে ভারতীয় চিনিই কিনতে হয়।

 সম্প্রতি উপজেলার কাঠেরপুল এলাকা থেকে পাচারের সময় একটি পিকআপ ভ্যান দুটি খোলা পিকআপে ১১ টন ভারতীয় চিনি আটক করে কসবা থানা পুলিশ। এরপরও বন্ধ হয়নি চোরাকারবার। চতুর চোরাকারবারিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন চিনি পাচার।


 কসবা থানার সাবেক  ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এর আমলে, ‘অবৈধ পথে ভারতীয় চিনি আনা বন্ধে পুলিশ নিয়মিত কাজ করেছিল। সম্প্রতি তিনটি গাড়িসহ বড় ধরনের চিনির চালান জব্দ করেন পুলিশ।


বিষয়ে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মেহেদি হাসান বলেন, ‘অবৈধ পথে চিনি আনা বন্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিগত সময়ে বেশ কিছু দোকানিকে অবৈধ ভারতীয় চিনি রাখার দায়ে জরিমানা করা হয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন  নিউজ আপডেট কে জানান, ‘কসবায় অবৈধ পথে আনা চিনি উদ্ধারসহ চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই কাজ করছে পুলিশ। সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে  সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ চিনি উদ্ধারসহ চোরাকারবারি আটক হয়েছে। অবৈধ পথে আসা পণ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেও কাজ করছে পুলিশ। 


এই চিনি নিয়ে তুলকালাম ভূতের কান্ড ঘটনা সৃষ্টি হয়েছিল।  সম্প্রতি এই চিনি পাচারে বায়েক ইউপির আওয়ামী লীগের নেতা নুরনবী আজমল নামে এক ব্যক্তিকে চালান দিয়েছিল। আর প্রকৃত চিনি কারবারিদের চালান না দিয়ে নুরনবী আজমলকে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার বিষয়টি আলোচনা ও সমালোচনা ঝড় উঠেছিল। বায়েক  ইউনিয়নের  সীমান্ত দিয়ে প্রতি দিন টনে টনে ভারতীয় নিম্মমানের চিনি বিভিন্ন যানবাহ করে সীমান্ত বাহিনীর সদস্যদের চোখের সামনে দিয়ে  আসছে। অধিকাংশ চিনি কুটি ইউনিয়নের বিলঘর গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তির বাড়িতে গোডাউন হিসেবে রক্ষিত থাকেন। এবং রাতে দিবা লোকে কাঠেরপুল দিয়ে কুটি সহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পাচার হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রটি জানান। 

 গতকাল ১২/০৭/২৪ তারিখ রাত ১২.০০ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো:গোলাম সওয়ার  কসবা'র নেতৃত্বে কসবা থানা পুলিশ ও বিজিবি সহযোগে যৌথ টাস্কফোর্স অভিযানে জনৈক হানিফ চৌধুরীর বাড়ি থেকে ১৭৩ বস্তা চিনি জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে কসবা থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযানটি একটি সাহসি অভিযান বলে স্থানীয়রা অভিমত প্রকাশ করেছেন। অথচয় সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত বাহিনীর সদস্যরা প্করতিনিয়ত যে কাজটি করার কথা থাকলেও তাদের  চোখের সামনে উপজেলা প্রশাসন একটি চম’ৎকার অভিযান পরিচালনা করেছেন বলে সচেতনমহল দাবী করেছেন। এই ভাবে অভিযান অব্যাহত থাকলে ভারতীয় অবৈধ পথে নিম্মমানের চিনি বাংলাদেশে আর প্রবেশ করবে না স্থানীয়রা জানান।

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Instagram

Smartwatchs