বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে : জাতিসংঘ

 বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে : জাতিসংঘ

নিউজ আপডেট আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ১ আগস্ট ২০২৪


বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়া বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সাংবাদিক নিহত হওয়া ও পরবর্তীতে সাংবাদিকদের আটক করার ঘটনায়ও নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি।


জাতিসংঘ বলেছে, মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার রক্ষা করতে হবে। এছাড়া জাতিসংঘ যেকোনও জায়গায় সরকারকে সাহায্য করতে সবসময় প্রস্তুত বলেও জানানো হয়েছে।

 স্থানীয় সময় বুধবার (৩১ জুলাই) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এবং সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এসব মন্তব্য করেন।


এদিনের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক প্রথমে বাংলাদেশ ইস্যুতে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। এরপর সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং যে সহিংসতা আমরা দেখেছি তা সত্ত্বেও, সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যেবাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে এবং আমরা আমাদের অংশীদাররাসাইক্লোন রেমালসহবেশ কয়েকটি জরুরি ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছি। এসব ঘটনায় চলতি বছর সারা বাংলাদেশে কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কার্যক্রম পরিচালনায় চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের অংশীদাররা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের মধ্যে স্পষ্টতই ইন্টারনেট বিভ্রাট, ব্যাংক বন্ধ এবং কারফিউয়ের মতো ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।


বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গত মাসে আমরা এবং আমাদের অংশীদাররা ১২ লাখ মানুষকে সহায়তা করার জন্য ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা চালু করেছি। বর্তমানে এর মাত্র ১৮ শতাংশ অর্থায়ন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য গত জুন কেন্দ্রীয় জরুরি প্রতিক্রিয়া তহবিল থেকে ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া যমুনা অববাহিকায় বসবাসকারী সম্প্রদায়গুলোতে নগদ অর্থ প্রদানের জন্য গত জুলাই কেন্দ্রীয় জরুরি প্রতিক্রিয়া তহবিল থেকে অতিরিক্ত আরও ৬২ লাখ মার্কিন ডলার রিলিজ করা হয়েছে। এবং অবশ্যই মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য এবং স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে সহায়তা করার জন্য কক্সবাজারে বিশাল মানবিক কর্মকাণ্ডও চলমান রয়েছে।


পরে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, সংঘর্ষ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর দমন-পীড়ন চলছে। ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ কি জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে এবং জাতিসংঘ কি রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত কোনো তদন্তে সহায়তা করবে বা নিজস্ব তদন্তের প্রস্তাব দিলে, জাতিসংঘ কি কোনো সহায়তা করবে?


 জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আপনার প্রশ্নে উত্তর দেওয়ার মতো কিছু বিষয় রয়েছে। অবশ্যই, যেকোনও জায়গায় সেইসব সরকারকে সাহায্য করার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত, যারা বিভিন্ন ইস্যুতে সাহায্য চেয়ে অনুরোধ করে। কিভাবে আমরা সেই কাজটি সর্বোত্তমভাবে করতে পারি সেটা আমরা দেখবো। স্বাধীন তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতেযেমন আপনি জানেনএর জন্য এই সংস্থার (জাতিসংঘের) আইন প্রণয়নকারী সংস্থার ম্যান্ডেটের প্রয়োজন হবে।


এরপর পৃথক প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বাংলাদেশে সাম্প্রতিক আন্দোলনে সাংবাদিকদের নিহত হওয়া পরে দমন-পীড়নের মধ্যে সাংবাদিকদের আটকের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, আপনি যেমন গাজায় নিহত সাংবাদিকদের কথা বলছিলেন, সাম্প্রতিক দিনে বাংলাদেশে অন্তত তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং কেউ জানেন না তারা কোথায় আছেন। সাঈদ খান নামে আমার এক সহকর্মী আমার সংবাদ সংস্থার জন্য কাজ করতেন। তিনি এখন কোথায় আছেন কেউ জানে না।


 জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে (বিক্ষোভে) সরাসরি তাজা গুলিবর্ষণ গোলাবারুদের ব্যবহার নিয়ে আমরা নিন্দা জানিয়েছি। বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও হোক না কেন, জনগণের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার রক্ষা করতে হবে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীন বাধাহীনভাবে কাজ করার অধিকার রক্ষা করতে হবে।


 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Instagram

Smartwatchs