সেনাপ্রধান
হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান
নিউজ আপডেট
ডেস্ক: ২৩ জুন
২০২৪
সেনাবাহিনী
প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি জেনারেল এস
এম শফিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।রোববার
(২৩ জুন) এক বার্তায় এ
তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এর
আগে, ১১ জুন আইএসপিআর
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২৩ জুন অপরাহ্ন
থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, চিফ
অব জেনারেল স্টাফকে জেনারেল পদবিতে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক ওই তারিখ অপরাহ্ন
থেকে ৩ বছরের জন্য
সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান
১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের
সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। সামরিক জীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন কোর্সে
ভালো ফলাফলের ক্রমধারায় তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ, মিরপুর থেকে সাফল্যের
সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড
স্টাফ কলেজ, যুক্তরাজ্য থেকেও গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের
আওতায় প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যের
কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ ডিগ্রি
অর্জন করেন।
তার
সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য
সামরিক জীবন কমান্ডার, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের অভিজ্ঞতায়
পরিপূর্ণ। তিনি ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে
২০১০ সালে ৮ জুন পর্যন্ত
১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক ও
অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে
দায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন।
তিনি
২০১১ সালের ২৭ জুলাই থেকে
২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত
দুই বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক
ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জিওসি হিসেবে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল থেকে
২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
তিন বছর নবম পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া ও জেনারেল অফিসার
কমান্ডিং (জিওসি) নবম পদাতিক ডিভিশন হিসেবে তিনি টানা তিন বছর সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ এর
প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এই বিরল কৃতিত্বের
স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘সেনাগৌরব পদক’ (এসজিপি) এ ভূষিত হন।
স্টাফ
হিসেবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত একটি ব্রিগেড, স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড
ট্যাকটিকস (এসআইএন্ডটি) এবং সেনাসদরে বিভিন্ন পদবি ও নিয়োগে দায়িত্ব
পালন করেন। এছাড়া তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে জেসিও এনসিও একাডেমি (জেএনএ), স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড
ট্যাকটিকস ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট
অব পিস সাপোর্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিপসট) এ সুনামের সঙ্গে
সব পদবির দেশি-বিদেশি সেনাসদস্যদের প্রশিক্ষণ দেন।
সেনাসদর
সামরিক সচিবের শাখায় তিনি সহকারী সামরিক সচিব, উপ-সামরিক সচিব
এবং সামরিক সচিব (এমএস) হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে দীর্ঘদিন কর্তব্যরত ছিলেন। সেনাসদর, জিএস শাখার চিফ অব জেনারেল স্টাফ
(সিজিএস) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও-এএফডি) হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতিসংঘের
ব্যানারে মিলিটারি অবজার্ভার হিসেবে এংগোলাতে এবং সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে লাইবেরিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘অসামান্য সেবা পদক’ (ওএসপি) এ ভূষিত হন।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে দেশে ও বিদেশে উল্লেখযোগ্য
সংখ্যক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ
এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।
ব্যক্তিগত
জীবনে তিনি সামিহা রাইসা জামান ও শাইরা ইবনাত
জামান নামে দুই কন্যা সন্তানের জনক।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন