এমপি আনার হত্যার তদন্তে বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে ভারত

 

এমপি আনার হত্যার তদন্তে বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে ভারত

ঢাকা নিউজ ডেস্ক

ঝিনাইদহ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যা মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে ভারত। কথা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে কথা জানান তিনি।


জয়সওয়াল বলেন, এই বিশেষ মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশ ভারত উভয় দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিষয়ে সমন্বয় করছে। এছাড়া, প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরের দিন, ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনার। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। পরে বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় আজিম তার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য সতর্ক করেছিলেন।

জয়সওয়াল বলেন, আমাদের দিক থেকে সরকার বিষয়ে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে।

গত ১৫ মে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় এমপি আনার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি পৌঁছেছেন এবং ভিআইপিদের সঙ্গে আছেন। তাকে ফোন করার দরকার নেই। একই বার্তা পাঠান বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও।

১৭ মে আনারের পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে জানান, তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিনই ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে এমপি আনারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

২০ মে এমপি আনারের খোঁজ করতে গিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে। তারা জানতে পারে, কলকাতায় বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মোবাইলের লোকেশন একবার পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায়। এরপর ১৭ মে তার ফোন কিছুক্ষণের জন্য সচল ছিল বিহারে।

পরে ২২ মে ভারতের এনডিটিভির খবরে বলা হয়, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্লাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে। খুনের পর মরদেহ টুকরো টুকরো ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। এনডিটিভি বলে, ১২ মে কলকাতায় আসার পর নিখোঁজ হওয়া এমপি আনারের খোঁজে তল্লাশি শুরুর পর ২২ মে সকালে তার খুনের ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

এদিকে, সেদিনই ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এমপি আনার সংসদ ভবন এলাকায় থাকতেন। সেখান থেকে তিনি ভারতে গেছেন। তাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান হারুন-অর-রশিদের পরামর্শে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে।

ঘটনায় তদন্তে নামে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি ডিবি পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, ব্যবসায়িক লেনদেনের সম্পর্কে কিছু বিষয়ে এমপি আনারের ওপর ক্ষোভ ছিল তার বন্ধু হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের। ২০০ কোটি টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আনারকে খুন করা হয়। আগেও একাধিকবার এমপি আনারকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন শাহীন।

সবশেষ গুলশান এবং কলকাতার নিউমার্কেটে দুই দফায় হত্যার ছক কষা হয়। এরপর গত ১২ মে এমপি আনার কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্যাংয়ের সদস্য শিলাস্তির মাধ্যমে তাকেহানিট্র্যাপেফেলা হয়। এরপর নিউটাউনের ফ্ল্যাটে এনে ১৩ তারিখ রাতে আনারকে হত্যা করা হয়।

ঘটনায় বাংলাদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান তানভীর ভূঁইয়াসহ তিনজনকে। তাদের তিনজনকে আট দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।..বিস্তারিত দেখুন

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Instagram

Smartwatchs